পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ মঙ্গলবার (৬ মে) দেশটির ইন্টার-সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (আইএসআই)-এর সদর দফতর পরিদর্শন করেছেন। যেখানে তাকে ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে প্রচলিত হুমকি মোকাবিলায় দেশের প্রস্তুতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। তারা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছে, বাহিনীগুলো ভারতের যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।
এ উচ্চপর্যায়ের সফরটি এমন এক সময়ে হয়েছে, এক সপ্তাহ আগে কাশ্মীরের পাহালগামে প্রাণঘাতী হামলার পর ভারত সামরিক অভিযান চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছে পাকিস্তান। তদন্ত বা প্রমাণ ছাড়াই ভারত হামলাকারীদের সীমান্ত পারাপারের সংযোগ রয়েছে বলে ইঙ্গিত দেয়। পাকিস্তান এই দাবি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানায়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর (পিএমও) মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানায়, ‘প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে বিদ্যমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত ব্রিফিং প্রদান করা হয়। বিশেষ করে ভারতের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসী ও উসকানিমূলক অবস্থানের প্রেক্ষাপটে প্রচলিত হুমকির জন্য প্রস্তুতির ওপর জোর দেওয়া হয়।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি ও হুমকির বিবর্তন, যার মধ্যে রয়েছে প্রচলিত সামরিক বিকল্প, হাইব্রিড যুদ্ধ কৌশল ও সন্ত্রাসবাদী প্রক্সি ব্যবস্থাপনা—সবই নিয়ে নেতাদের অবহিত করা হয়।’
প্রধানমন্ত্রীর অফিস জানায়, সফরে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজের সঙ্গে ছিলেন উপপ্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার, প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ এবং সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধানরা।
প্রকাশিত একটি ছবিতে দেখা যায়, সফরে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আসিম মুনির, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল নবীদ আশরাফ, ও বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল জাহির আহমদ বাবর অংশ নিয়েছেন।
ছবিতে আরও দেখা যায়, আইএসআই মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ আসিম মালিক—যিনি সম্প্রতি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিযুক্ত হয়েছেন—এবং সামরিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী এবং সফরসঙ্গী গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ‘জাতীয় সতর্কতা বৃদ্ধি, সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় এবং অভিযানে প্রস্তুতি নিশ্চিত করার গুরুত্বের ওপর জোর দেন, যাতে দেশের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার যেকোনো লঙ্ঘনের জবাব দেওয়া যায়।’
আইএসআই-এর পেশাদারিত্ব ও কৌশলগত দক্ষতার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি জটিল ও পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিতে জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ে তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, ‘পাকিস্তান সেনাবাহিনী বিশ্বের অন্যতম পেশাদার ও শৃঙ্খলাবদ্ধ বাহিনী।’ তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন যে ‘সমগ্র জাতি আমাদের সাহসী সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে আছে।’
নেতারা পুনরায় জানান যে, জাতির পূর্ণ সমর্থন নিয়ে সশস্ত্র বাহিনী এবং রাষ্ট্রীয় অন্যান্য শক্তি ও প্রতিষ্ঠান ‘পাকিস্তানের নিরাপত্তা, মর্যাদা ও সম্মান রক্ষায় সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত রয়েছে।’
Comments
Post a Comment